একই উঠানে মন্দির-মসজিদ, দুর্গাপূজা ও প্রার্থনা চলছে

0
50
Advertisements
Rate this post

একই উঠানে মন্দির-মসজিদ, দুর্গাপূজা ও প্রার্থনা চলছে

মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান(Hindu and Muslim), মুসলিম তার নয়নমণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।’ কাজী নজরুল ইসলামের এই পংক্তিটি অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায় বাংলাদেশের(Bangladesh) লালমনিরহাট(Lalmanirhat) শহরের কালীবাড়ি এলাকায়। কেননা এখানে দেখা মেলে একই উঠোনে মন্দির-মসজিদের।

একদিকে ধুপ, অন্যদিকে প্রার্থনা। একদিকে ধূপ, অন্যদিকে সুগন্ধি। একই উঠানে মন্দির আর মসজিদ। এভাবেই ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে দুটি পৃথক ধর্মীয় উপাসনালয়। পুরাতন বাজার জামে মসজিদ (পুরাতন বাজার জামে মসজিদ) এবং কালীবাড়ির কেন্দ্রীয় মন্দির (কালীবাড়ি মন্দির) লালমনিরহাট শহরে ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন বহন করে। এবারের দুর্গাপূজাও তার ব্যতিক্রম নয়।

শীঘ্রই ডিমকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে ঘোষণা : উপদেষ্টা

Advertisements

লালমনিরহাট শহরের বাসিন্দাদের দাবি, কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৮৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নামাজ পড়ার জন্য এর পাশে একটি ছোট বাড়ি তৈরি করে এবং এর নাম দেয় পুরাতন বাজার জামে মসজিদ। এরপর থেকে এক উঠানে দুই ধর্মের দুটি উপাসনালয়ে কাজ চলছে। প্রতি বছর দুর্গাপূজার আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়।

নামাজ বা আযানের সময়সূচী অনুযায়ী নামাজ-আরচন বাজানো বন্ধ। নামাজ শেষে আবার শুরু হয় পূজার অনুষ্ঠান। এ কারণে মসজিদ-মন্দির প্রাঙ্গণে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সাম্প্রদায়িক কোনো সংঘর্ষ বা দাঙ্গা ছাড়াই প্রায় শত বছর ধরে একই অঙ্গনে দুই ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করে আসছে। পূজার সময় মসজিদ-মন্দিরের সামনে যেমন মেলা বসে, তেমনি মুসলমানদের জানাজাও হয়। উভয় ধর্মের মানুষ সমানভাবে এই জমি ব্যবহার করে।

সাধারণ মানুষ প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মন্দির ও মসজিদ দেখতে আসেন। কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও এসব মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করেছেন।

পুরান বাজার জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, ঐতিহ্যবাহী পুরাতন বাজার মসজিদের পাশেই মন্দিরটি। মসজিদের আগে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তবুও এখানে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করে। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা নেই।’

কালীবাড়ি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘১৮৩৬ সালে মন্দিরটি স্থাপিত হওয়ার পর এলাকার নামও হয় কালীবাড়ি। পরবর্তীতে এখানে বাজার নির্মিত হলে বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের দেয়াল ঘেঁষে পুরাতন বাজার জামে মসজিদ নির্মাণ করেন। এরপর থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা নেই।’

Advertisements

Leave a Reply