সূরা নাস (Al-Nas) বাংলা অর্থ,উচ্চারণ,শানে নুযুল সহ

Author:

Published:

Updated:

সূরা নাস (Al-Nas) বাংলা অর্থ,উচ্চারণ,শানে নুযুল সহ

Get Study Online – Google News

Do you want to get our regular post instant? So you can follow our Google News update from here.

Rate this post

 

সূরা নাস (Al-Nas) বাংলা অর্থ,উচ্চারণ,শানে নুযুল সহ

 

সূরার নাম : আন – নাস

শ্রেণী : মাদানী সূরা (মদীনায় অবতীর্ণ)

অন্য নাম : মানুষ

নামের অর্থ : মানবজাতি

সূরার ক্রম : ১১৪

আয়াতের সংখ্যা : ৬

রুকুর সংখ্যা : ১

পারার ক্রম : ৩০ পারা

শব্দ : ২০

 

বর্ণ : ৮০

সূরা নাস বাংলা উচ্চারণ

(1
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ
কুল আ’উযুবিরাব্বিন্না-ছ।
বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার,
(2
مَلِكِ النَّاسِ
মালিকিন্না-ছ
মানুষের অধিপতির,
(3
إِلَـٰهِ النَّاسِ
ইলা-হিন্না-ছ।
মানুষের মা’বুদের
(4
مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ
মিন শাররীল ওয়াছ ওয়া-ছিল খান্না-ছ।
তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে,
(5
الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ
আল্লাযি ইউওয়াছ ইসু ফী সুদুরিন্নাছ-।
যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে
(6
مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ
মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-ছ।
জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।

 

সুরাটি ৬ আয়াত, ১ রুকু সমৃদ্ধ কুরআনুল কারিমের সর্বশেষ (১১৪তম) সুরা। এর প্রতিটি আয়াতের মাধ্যমে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব ধরনের অনষ্টিতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় সুরাটির রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা।

সূরা নাস নামকরণ

আন-নাস শব্দের অর্থ হল “মানবজাতি” সূরা আন-নাস ও সূরা আল-ফালাক সূরা দুটি ভিন্ন হলেও এদের সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।  সূরা দুটির বিষয়বস্তু একই এবং একই ঘটনার প্রেক্ষিতে নাযিল করা হয়েছে। আসুন ঘটনাটি জেনে নেওয়া যাক।

সূরা নাস শানে নুযূল

মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত আছে যে, এক ইহুদী রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর উপর মন্ত্র করেছিল। ফলে তিনি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অতঃপর জিব্রাইল ফেরেশতা আল্লাহর নির্দেশে নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন যে, একজন ইহুদী তাঁর উপর মন্ত্র ছুড়েছে এবং যে বস্তু দ্বারা তিনি মন্ত্র ছুড়েছিলেন তা অমুক কূপে রয়েছে। পরে রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেটি কূপ থেকে উদ্ধার করার জন্য লোক পাঠালেন। এটিতে কয়েকটি গিট ছিল । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সূরা আন-নাস এবং সূরা আল ফালাক পাঠ করার সাথে সাথে গিটগুলো খুলে গেল এবং নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেলেন।

হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত – একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উপর একটি মন্ত্র পড়েছিল যার প্রভাবে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি অনুভব করলেন যে তিনি যা করেননি তা তিনি করেছেন। অতঃপর তিনি আয়েশা (রাঃ) কে বললেনঃ আল্লাহ আমাকে বললেন আমার রোগ কি?  আমি সপ্নে দেখলেন দুজন লোক তার কাছে আসলেন এবং একজন শিয়রের কাছে ও অন্যজন পায়ের কাছে বসে গেলো। শিয়রের কাছে থাকা ব্যক্তিটি অন্য ব্যক্তিটিকে প্রশ্ন করলো উনার রোগটা কি? অন্য ব্যক্তিটি বললেন উনি জাদুগ্রস্থ, উনার উপর জাদু করা হয়েছে। প্রথম ব্যক্তি জানতে চাইলেন কে জাদু করেছে? উত্তরে বললেন লবীদ ইবনে আ’সাম (ইহুদীদের মিত্র মুনাফিক) জাদু করেছে। আবার প্রশ্ন করা হল কি দিয়ে জাদু করা হয়েছে? উত্তরে বলা হল একটি চিরুনীতে। আবার প্রশ্ন আসলো চিরুনীটি কোথায়? উত্তরে বলা হল খেজুর ফলের আবরণীতে ‘বির যরোয়ান’ কূপে একটি পাথরের নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) সেই কূপের কাছে গেলেন যা তিনি স্বপ্নে দেখেছিলেন। পরে  চিরুনীটি সেখান থেকে বের করে  আনলেন।

সূরা নাস (Al-Nas) বাংলা অর্থ,উচ্চারণ,শানে নুযুল সহ

সূরা নাস
সূরা নাস বাংলা উচ্চারণ সহ
সূরা নাস বাংলা
সূরা নাস বাংলা উচ্চারণ
সূরা নাস বাংলা অর্থসহ
সূরা নাস সূরা ফালাক বাংলা উচ্চারণ
সূরা নাস এর অর্থ
সূরা নাস বাংলা উচ্চারণ ছবি
সূরা নাস অর্থ কি
সূরা নাস এর তাফসীর

সুরা নাস-এর বিশেষত্ব

‘আন-নাস’ শব্দের অর্থ মানব জাতি। সুরার প্রথম তিন আয়াতে আল্লাহ তায়ালার মাহাত্ন্য বর্ণিত আছে। আর পরের তিন আয়াতে জ্বিন ও মানুষরূপী শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে মহান আল্লাহর কাছ থেকে আশ্রয় গ্রহণের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 
এ সুরার আমলে হাদিসের দিকনির্দেশনাগুলো হলো-
> সুরা নাস পড়লে শয়তানের অনিষ্ট ও যাদু থেকে হেফাজতে থাকা যায়। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সুরা ইখলাস ও এই দুই সুরা ( সুরা ফালাক ও সুরা নাস) পড়বে সে সকল বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (তিরমিজি)
> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রাতে যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন নিজের উভয় হাত এক সঙ্গে মিলাতেন। তারপর সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়তেন এবং উভয় হাতে ফুঁক দিতেন। তারপর দেহের যতটুকু অংশ সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। তিনি মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। তিনি এরূপ তিনবার করতেন।’ (বুখারি)
> ফজর আর মাগরিবে এই দুই ওয়াক্তের ফরজ নামাজের পর সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস প্রতিটি তিনবার করে পড়া সুন্নত। অন্যান্য ফরজ সালাতের আদায় করে একবার করে এই তিন সুরা পড়ার কথা বলা হয়েছে।’ (আবু দাউদ)
> একবার এক ইয়াহুদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর জাদু করেছিল। যার ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। জিবরিল আলাইহিস সালাম তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানালেন যে, এক ইয়াহুদি তাকে জাদু করেছে এবং যে জিনিস দিয়ে জাদু করা হয়েছে তা একটি কুপের মধ্যে পাথরের নিচে আছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই জিনিসগুলো কূপ থেকে উদ্ধার করার জন্য লোক পাঠালেন। সেই কূপের মধ্যে পাথরের নিচে কয়েকটি গিরা পাওয়া গিয়েছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরা নাস ও ফালাক একসঙ্গে পড়ে (ওই গিরায়) ফুক দেন এবং গিরাগুলো সঙ্গে সঙ্গে খুলে যায়। আর তাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বিছানা থেকে ওঠেন।
> হজরত উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমার কি জানা নেই আজ রাতে আমার ওপর যে আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে এগুলোর মতো কোনো আয়াত দেখাও যায়নি এবং শোনাও যায়নি। আর তাহলো- কুল আউজু বি রাব্বিল ফালাক ও কুল আউজু বি রাব্বিন নাস।’ (মুসলিম)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে মুক্ত থাকতে সুরা নাস-এর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমলগুরো বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

About the author

One response to “সূরা নাস (Al-Nas) বাংলা অর্থ,উচ্চারণ,শানে নুযুল সহ”

Leave a Reply

Latest posts

Enable Notifications OK No thanks