ঈমানী দুর্বলতার লক্ষণ,কারণ ও চিকিৎসা | দুর্বল ঈমানের লক্ষণ

1
134
ঈমানী দুর্বলতার লক্ষণ,কারণ ও চিকিৎসা | দুর্বল ঈমানের লক্ষণ Signs of weak faith
ঈমানী দুর্বলতার লক্ষণ,কারণ ও চিকিৎসা | দুর্বল ঈমানের লক্ষণ
Advertisements
Rate this post

ঈমানী দুর্বলতার লক্ষণ,কারণ ও চিকিৎসা | দুর্বল ঈমানের লক্ষণ

Signs of weak faith

প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা আজকের পোস্ট থেকে আমরা জানবো ঈমানী দুর্বলতার লক্ষণ,কারণ ও চিকিৎসা । তো চলুন শুরু করা যাক —

শক্তিশালী ঈমান ও দুর্বল ঈমানের মধ্যে পার্থক্য কি?

শক্তিশালী ঈমান হল –

Advertisements

যারা আল্লাহ এবং তার রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে । এবং নিয়মিত ফরজ রুকন গুলো আদায় করে । সৎ কাজে আদেশ দেয় এবং খারাপ কাজে নিষেধ করে ।

আর দুর্বল ঈমান হল –

যারা আল্লাহ এবং তার রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ঈমান এনেছে তবে তার দেওয়া নির্দেশ যথাযথভাবে আদায় করে না । ফরজ রুকন গুলো ঠিক ভাবে পালন করে না ।

আল্লাহ তাআলা বলেন –

২ : ২০৮ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا ادۡخُلُوۡا فِی السِّلۡمِ کَآفَّۃً ۪ وَ لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّهٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۲۰۸﴾

হে ঈমানদারগণ, তোমরা ইসলামে পুরোপুরি প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চিত জেনো, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সুত্র: কালের কন্ঠ

ঈমান মজবুত করার উপায় কি?

  • নিয়ত পরিশুদ্ধ করা ।
  • নিয়মিত কোরআন পড়া ।
  • প্রতিদিন দুরুদে পাক পাঠ করা ।
  • আল্লাহ তাআলার স্মরণ করা এবং তার বড়ত্ব অনুভব এবং তাঁর নাম ও গুণাবলীর চিন্তা করা।
  • শরীয়াতের এবং তরীক্বতের জ্ঞানার্জন।
  • নিয়মিত ইসলামী আলোচনায় উপস্থিত হওয়া এবং তা অনুযায়ী আমল করা।
  • বেশী বেশী নেক আমল করা ও নেক কাজে প্রতিযোগিতা করা।
  • বিভিন্ন ধরনের ইবাদাতে (শারীরিক, আর্থিক) আত্মনিয়োগ করা।
  • অশ্লীলতা থেকে নিজেকে হেফাজত রাখা ।

কিভাবে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস অর্জন করা যায়?

আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস বৃদ্ধির লক্ষ্যে আপনাকে বেশি বেশি খোদাভীরু আলেমদের সাহচর্যে থেকে সৎকাজে নিজেকে নিয়োজিত করার চেষ্টা করতে হবে । কেননা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সাথে থাকলেই ঈমানের আলো বাড়বে। এবং যতদিন আপনি তাদের সাথে থাকবেন, আপনি যদি তাদের সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে মেনে চলেন তবে আপনার ঈমান মজবুত হবে। আপনার বিশ্বাসের শ্রেষ্ঠত্বের দৈর্ঘ্য এবং স্থায়ীত্ব নির্ভর করে তাদের সাথে আপনার ঘনিষ্ঠতার দৈর্ঘ্য এবং স্থায়ীত্বের উপর।

ঈমানের প্রথম কথা কি?

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলাল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ।

ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্তি কয়টি ও কি কি?

ইসলাম শব্দের অর্থ কি?
“ইসলাম” শব্দের অর্থ “আত্মসমর্পণ”, বা একক স্রষ্টার নিকট নিজেকে সমর্পণ। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতকে আরবের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলামের নবী মুহাম্মদ এই ধর্ম প্রচার করেন। কুরআন ইসলামের মূল ধর্মগ্রন্থ। এই ধর্মে বিশ্বাসীদের মুসলমান বা মুসলিম বলা হয়।

ইসলাম শিক্ষার মূল ভিত্তি কী?

কুরআন শিক্ষা

ইসলামের সমস্ত বিশ্বাস, অনুশীলন এবং আইনের ভিত্তি হল কুরআন। ইসলামের মতে, প্রত্যেক মুসলমানকে প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অংশ হিসেবে কোরআনের অন্তত একটি ছোট অংশ মুখস্ত করতে হবে এবং কোরআনের একটি অংশ তেলাওয়াত করতে হবে। তাই কুরআন শিক্ষা ইসলামী শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

কুরআন কি শিক্ষা দেয়?

পবিত্র কোরআন পাঠের মাধ্যমে মানুষ পরকালের জবাবদিহিতার ধারণা শিখে, যেখানে মানুষকে এই পৃথিবীতে তাদের কর্মের ভিত্তিতে বিচার করা হবে। এটি ক্ষমা, পুনর্মিলন এবং বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের শিক্ষা দেয়। কুরআন মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রদায় এবং সহযোগিতার গুরুত্বের উপর জোর দেয়।

মুসলমানদের জন্য কুরআন ও হাদিসের গুরুত্ব?
ইসলাম ধর্মের প্রধান দুটি উৎস হলো কুরআন ও হাদীস। এই দুটি হল যেখানে বেশিরভাগ শিক্ষা আসে। নির্দেশিকা খুঁজতে গিয়ে, একজন মুসলিম প্রায়ই একটি বিষয়ে নিজেদেরকে শিক্ষিত করার জন্য এই দুটির মধ্যে একটিকে উল্লেখ করে। কুরআন ইসলামের কেন্দ্রীয় ধর্মীয় গ্রন্থ।

  • দুর্বল ঈমানের লক্ষণ:-

১। পাপে নিমজ্জিত হওয়া, হারাম কাজ করা।

২। অন্তকরণে কাঠিন্য অনুভব, উপদেশ বা জানাজা দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া।

৩। ইবাদতে একাগ্রতার অভাব, বরং উদাসীনতা।

৪। ইবাদত ও আনুগত্যে শৈথিলতা ও অলসতা প্রদর্শন।

৫। মেজাজের ভারসাম্যহীনতা ও বক্ষের অপ্রশস্থততা।

৬। কুরআনের আয়াত দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া।

৭। আল্লাহর জিকির ও দুয়ার ব্যাপারে গাফিল হওয়া।

৮। হারাম কাজ হতে দেখলেও ক্রোধের সঞ্চার না হওয়া।

৯। নিজেকে প্রকাশ করতে ভালবাসা।

১০। কৃপণতা।

১১। কথা ও কাজে অমিল।

হযরত আবু বকর রাঃ এর ঘটনা

১২। মুসলিম ভাইয়ের বিপদে খুশি হওয়া।

১৩। কোন কাজ গুনাহের কিনা তা না দেখে নিজের অপছন্দের কিনা তা দেখা।

১৪। ভাল কাজ তুচ্ছজ্ঞান ও নেকীর কাজ গুরুত্ব না দেয়া।

১৫। মুসলিমদের সমস্যার ব্যাপারে গুরুত্ব না দেয়া।

১৬। ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিন্ন করা।

১৭। দ্বীনের কাজে দায়িত্বানুভূতি না থাকা।

১৮। বিপদাপদে ভীত সন্ত্রস্ত হওয়া।

১৯। দুনিয়ার প্রতি আকর্ষণ ও এর প্রতি ঝুঁকে যাওয়া।

২০। অনর্থক ঝগড়া বিবাদ বা তর্কে লিপ্ত হওয়া।

২১। জনশ্রুতিকে বর্ণনার জন্য গ্রহন করা।

২২। নিজেকে নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকা।

  • ঈমানী দুর্বলতার কারণ:-

১। ঈমানী পরিবেশ থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকা।

২। সৎ ও অনুকরণযোগ্য ব্যক্তি হতে দূরে থাকা।

৩। শরীয়তী জ্ঞান ও ঈমানী বই হতে দূরে থাকা।

৪। গুনাহগারদের মাঝে অবস্থান করা।

৫। দুনিয়ার মোহে মগ্ন হওয়া।

৬। ধন-সম্পদ ও পরিবার নিয়েই মেতে থাকা।

৭। উচ্চাকাঙ্ক্ষা বা বিলাসী আকাঙ্ক্ষা।

৮। বেশী খাওয়া, বেশী ঘুম, বেশী কথা, অধিক রাত্রিজাগরণ, কাঠিন্যতা ।

  • ঈমানী দুর্বলতার চিকিৎসা:-

১। কুরআন নিয়ে চিন্তা গবেষণা করা।

২। মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর বড়ত্ব অনুভব এবং তাঁর নাম ও গুণাবলীর চিন্তা করা।

৩। শরীয়াতের জ্ঞানার্জন।

৪। নিয়মিত ইসলামী আলোচনায় উপস্থিত হওয়া।

৫। বেশী বেশী নেক আমল করা ও নেক কাজে প্রতিযোগিতা করা।

৬। বিভিন্ন ধরনের ইবাদাতে (শারীরিক, আর্থিক) আত্মনিয়োগ করা।

৭। খারাপ পরিণতির আশঙ্কা করা ও শেষ পরিণতির ব্যাপারে সতর্কতা।

৮। বেশী বেশী মৃত্যুর স্মরণ, জানাজা, দাফন ও জিয়ারতে অংশ নেয়া।

৯। পরকালের মাঞ্জিল যেমন- কিয়ামত, পুলসিরাত, জান্নাত, জাহান্নাম নিয়ে চিন্তা করা।

১০। প্রাকৃতিক কোন ঘটনা দেখলে পরকালের চিন্তা করা। যেমন-মেঘ, সূর্য, চন্দ্র, এদের গ্রহন।

১১। সর্বদাই আল্লাহর স্মরণ বা জিকির।

১২। মোনাজাত বা একাগ্রভাবে আল্লাহকে ডাকা।

১৩। কামনা বাসনা কম করা।

১৪। দুনিয়াকে নগন্য মনে করা।

১৫। আল্লাহর নির্দেশসমূহের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন।

১৬। মুমিনের সাথে সম্পর্ক গড়া ও কাফেরের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা।

১৭। বিনয়ী হওয়া, দুনিয়ার চাকচিক্য পরিহার করা।

১৮। অন্তরে আল্লাহকে ভালোবাসা,ভয় করা, তাঁর প্রতি সুধারনা ও ভরসা পোষণ করা, তাঁর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকা ও তাঁর নিকট তাওবা করা।

১৯। আত্নসমালোচনা করা।

২০। আল্লাহর নিকট মজবুত ঈমানের জন্য দুয়া করা।

Advertisements

1 COMMENT

Leave a Reply