Table of Contents
হিট স্ট্রোক কী ? হিট স্ট্রোক কেন হয় ? হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়।
হিট স্ট্রোক হলো এক ধরনের হাইপারথার্মিয়া। হাইপার হচ্ছে অধিক মাত্রা, আর থার্মিয়া মানে তাপ। অর্থাৎ শরীরে অধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকেই বলা হয় হিট স্ট্রোক।
হিট স্ট্রোক কী ?
হিট স্ট্রোক হলো এক ধরনের হাইপারথার্মিয়া। হাইপার হচ্ছে অধিক মাত্রা, আর থার্মিয়া মানে তাপ। অর্থাৎ শরীরে অধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকেই বলা হয় হিট স্ট্রোক। সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়।
হিট স্ট্রোককে বাংলা পরিভাষায় বলে আতপাঘাত।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ হচ্ছে−
- ত্বক লাল হয়ে যাওয়া,
- শরীর প্রচণ্ড ঘামতে শুরু করে আবার হঠাৎ করে ঘাম বন্ধ হওয়া,
- নিঃশ্বাস দ্রুত হওয়া,
- নাড়ির অস্বাভাবিক স্পন্দন হওয়া অর্থাৎ হঠাৎ ক্ষীণ ও দ্রুত হওয়া,
- রক্তচাপ কমে যাওয়া,
- প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া,
- হাত-পা কাঁপা,
- শরীরে খিঁচুনি হওয়া,
- মাথা ঝিমঝিম করা,
- তীব্র মাথা ব্যথা,
- ব্যবহারে অস্বাভাবিকতার প্রকাশ,
- কথাবার্তায় অসংলগ্ন হওয়া প্রভৃতি।
আমাদের শরীরের ভেতরে নানা রাসায়নিক ক্রিয়ার কারণে সব সময় তাপ সৃষ্টি হতে থাকে। ঘামের সাহায্যে সেই তাপ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
ঘামের সঙ্গে লবণ বেরিয়ে যাওয়ায় লবণের ঘাটতি দেখা দেয়; যার ফলে শরীর হয়ে পড়ে অবসন্ন ও পরিশ্রান্ত। এতে মাথা ঘুরিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারে অনেকেই।
অতিরিক্ত গরম এবং পানিশূন্যতা এড়ানোর জন্য সাবধানতা অবলম্বন করে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করা যেতে পারে। হালকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরলে শরীরের ঘাম বাষ্পীভূত হওয়ার সুযোগ পায় এবং এভাবে শরীর শীতল থাকে।
সাধারণত হিট স্ট্রোক হওয়ার কিছু সময় আগে শরীরে অত্যধিক তাপমাত্রা, মাথাব্যথা, দুর্বলতা, ঝিমুনি, বমি বমি ভাব ইত্যাদি হয়। অবস্থা খারাপের দিকে গেলে আরও কিছু উপসর্গ দেখা যায়। যেমন চামড়া লালচে হয়ে যাওয়া, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, হাঁটায় অসুবিধা, রক্তচাপ কমে যাওয়া, ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া, ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, বমি, অসংলগ্ন কথাবার্তা বা আচরণ, ঘন ঘন শ্বাস, নাড়ির দ্রুত গতি, চোখের মণি বড় হওয়া, খিঁচুনি ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
বৃদ্ধ ও শিশুদের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণক্ষমতা কম থাকে বলে তাদেরই হিট স্ট্রোক হয় বেশি। যাঁরা প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘ সময় শারীরিক পরিশ্রম করেন, যেমন রিকশাচালক, কৃষিজীবী, নির্মাণশ্রমিক, খনিশ্রমিক, তাঁদেরও হিট স্ট্রোক হয়। কিছু ওষুধ যেমন মানসিক রোগের ওষুধ, অ্যালকোহল নিয়মিত সেবনেও এ ধরনের অবস্থা হতে পারে।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় –
- দিনের বেলায় যথাসম্ভব বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন,
- রোদ এড়িয়ে চলুন
- বাইরে বের হলে ছাতা,
- টুপি/ক্যাপ, বা কাপড় দিয়ে মাথা যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন।
- হালকা রঙের, ঢিলে ঢালা এবং সম্ভব হলে সুতির জামা পরুন
- প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
- সহযে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন
- বাসি, খোলা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
- দিনের বেলায় একটানা শারীরিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন
- সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা নিন বা গোসল করুন
- প্রস্রাবের রঙের দিকে নজর রাখুন,
- তা হলুদ বা গাঢ় হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়ান
- ঘরের পরিবেশ যেন অতিরিক্ত গরম বা ভ্যাপসা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন
- বেশি অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
সবচেয়ে ঝুঁকিতে যারা-
- শিশু
- বয়স্ক ব্যক্তি
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
- শ্রমজীবী ব্যক্তি, যেমন রিকশাচালক, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক
- যাদের ওজন বেশি
- যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, বিশেষ করে যাদের হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ আছে
Leave a Reply