Table of Contents
অনুচ্ছেদ একুশে ফেব্রুয়ারি
বাঙালির জাতীয় জীবনের ঐতিহ্যবাহী দিন একুশে ফেব্রুয়ারি। এটি এখন সারা বিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃত। এ দিবসের সাথে বাঙালির জীবনের অনেক ত্যাগ, মহিমা, আবেগ ও আনন্দ জড়িত। একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা তোলার, বন্দি অবস্থা থেকে মুক্তির প্রেরণা যোগায়। এ দিনেই বাঙালি তার বুকের ভেতর লুকিয়ে থাকা সাহসিকতা ও মনোবলের প্রকাশ ঘটায়। ১৯৪৭ সালের দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের উৎপত্তি হলেও তারপর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা এ দেশের নিরীহ মানুষের ওপর নানা রকম অন্যায়, নিপীড়ন ও অত্যাচার চালায়।
অনুচ্ছেদ একুশে ফেব্রুয়ারি
তারা বাঙালি জাতিকে পঙ্গু করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এজন্য তারা প্রথমেই বাঙালির মুখের ভাষার ওপর আঘাত হানে। তারা উর্দুকে এ দেশের রাষ্ট্রভাষা করার অপচেষ্টায় মেতে ওঠে। কিন্তু বাঙালি দমে যাওয়ার জাতি নয়। ফলে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সারাদেশে ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ ছাত্রসমাজ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান নিয়ে রাজপথে বেরিয়ে পড়ে। বর্বর পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার এ মিছিলের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে নিহত হন রফিক, শফিক, সালাম, বরকতসহ আরো অনেকে।
একপর্যায়ে পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। বাঙালি নিজের জীবন দিতে জানে, কিন্তু কখনো ভাষা ছিনিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে জানে না, অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে জানে না। আর বাঙালি জাতির এ সাহসিকতা ও আত্মত্যাগকে সারা বিশ্বে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্ত জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। তাই বাঙালির ইতিহাসে দিনটি গৌরবদীপ্ত দিন। পৃথিবীর সকল জাতির মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় এ দিনটি। একুশের চেতনা আমাদের প্রত্যেকের অন্তরে লালন করতে হবে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। তবেই জীবনে আসবে জয় আর জয় ।
অনুচ্ছেদ একুশে ফেব্রুয়ারি
[…] অনুচ্ছেদ একুশে ফেব্রুয়ারি […]
[…] অনুচ্ছেদ একুশে ফেব্রুয়ারি […]
[…] আরো পড়ুন: অনুচ্ছেদ একুশে ফেব্রুয়ারি […]