রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া – রোযার নিয়তের মাসয়ালা

0
136
পাচঁ ওয়াক্ত নামাজের ফজিলত |ফজরের নামাজের ফজিলত
পাচঁ ওয়াক্ত নামাজের ফজিলত |ফজরের নামাজের ফজিলত
Advertisements
Rate this post

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া – রোযার নিয়তের মাসয়ালা – Intention of fasting and iftar prayer

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া - রোযার নিয়তের মাসয়ালা - Intention of fasting and iftar prayer
শয়তানকে জিঞ্জিরায় বন্দী করা হয়
  • রোজার নিয়ত,
  • রোজার নিয়ত বাংলা,
  • নফল রোজার নিয়ত,
  • রোজার নিয়ত আরবি,

★ অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়, শয়তানকে শিকলে বন্দী করা হয়। অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, রহমতের দরজা খুলে দেয়া হয়।
(সহীহ মুসলিম, পৃ-৫৪৩,হাদীস নং-১০৭৯)।

রোযা রাখার ফযিলত – রোজার ফজিলত – Virtues of fasting

রোজার প্রতিদান আল্লাহপাক নিজেই দেবেন এবং বিনা হিসাবে প্রত্যেক নেক আমলের নির্ধারিত সওয়াব ও প্রতিদান রয়েছে যার মাধ্যমে আল্লাহ পাক আমলকারীকে পুরস্কৃত করবেন। কিন্তু রোজারবিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ রোজার বিষয়ে আছে আল্লাহর পক্ষ থেকে এক অনন্য ঘোষণা।

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মানুষের প্রতিটি আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকির সওয়াব দশগুণ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত হতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, কিন্তু রোজার বিষয়টা আলাদা। কেননা তা আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করবো। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে।

Advertisements

১. সহীহ মুসলিম ১১৫১
২. মুসনাদে আহমাদ ৯৭১৪

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া - রোযার নিয়তের মাসয়ালা
রোযা রাখা গোনাহের কাফফারা স্বরূপ এবং ক্ষমালাভের কারণ

আল্লাহ তায়ালা রোজাদারদের কিয়ামতের দিন পানি পান করাবেন
হযরত আবু মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহ তায়ালা নিজের উপর অবধারিত করে দিয়েছেন যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গ্রীষ্মকালে (রোজা রাখার কারণে) পিপাসার্ত থেকেছে, তিনি তাকে তৃষ্ণার দিন (কিয়ামতের দিন) পানি পান করাবেন।

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া – রোযার নিয়তের মাসয়ালা

আমাদের ফেইসবুক পেইজে অনেকে অনুরোধ করেছেন রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ সহ দেওয়ার জন্য তো আমরা আজ আপনাদের জন্য এই বিষয় পোস্ট দিলাম । পোস্টে কোন প্রকার ভুল পরিলক্ষিত হলে অবশ্যই আমাদের জানাবেন ।

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া

রোজার আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার আরবি নিয়ত - রোজার নিয়ত আরবি
রোজার আরবি নিয়ত – রোজার নিয়ত আরবি

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ :

নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ
রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম।

ইফতারের দোয়া

بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ :

আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিজের মাধ্যমে ইফতার করছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)

রোজাদার বেহেস্তে প্রবেশ করবেরাইয়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে
হযরত সাহল ইবনে সা’দ রাঃ হতে বর্ণিত, নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতে একটি দরজা আছে যার নাম রাইয়ান। কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে কেবল রোজাদারগণ প্রবেশ করবেন। অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে কোথায় সেই সৌভাগ্যবান রোজাদারগণ? তখন তারা উঠে দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অতঃপর রোজাদারগণ যখন প্রবেশ করবে, তখন তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
১. সহীহ মুসলিম ১১৫২
২. মুসনাদে আহমাদ ২২৮১৮

রোজা কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বর্ণিত, রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, রোজা ও কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে রব, আমি তাকে খাদ্য ও যৌন সম্ভোগ থেকে বিরত রেখেছি। অতএব তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। অতএব তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন।
রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, অতঃপর তাদের উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।
(মুসনাদে আহমাদ ৬৬২৬)

রোজাদারের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা রাখে তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়।
(সহীহ বুখারি ২০১৪)

রোজাদারের দুটি আনন্দের মুহূর্ত
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বর্ণিত, নবীজী (সাঃ) বলেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে। যখন সে আনন্দিত হবে-
এক. ইফতারের সময়। তখন সে ইফতারের কারণে আনন্দ পায়।
দুই. যখন সে তার রবের সঙ্গে সাক্ষাত লাভ করবে তখন তার আনন্দ হবে। অপর এক বর্ণনায় এসেছে, যখন তার প্রতিপালক রোজার পুরস্কার দিবেন। (সহীহ মুসলিম ১১৫১)

রোজাদারের দুয়া কবুল হয়
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) ইরশাদ করেন, ইফতারের সময় রোজাদার যখন দুয়া করেন তখন তার দুয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (অর্থাৎ দুয়া কুবল কর হয়)
(সুনানে ইবনে মাজাই ১৭৫৩)

রোযার নিয়তের মাসয়ালা

রোযার নিয়তের মাসয়ালা

  • নিয়ত করার অর্থ মনে মনে এরাদা করা, মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জরুরী নয়, শুধু মনের মধ্যে ইচ্ছা করাই যথেষ্ট। বরঞ্চ সেহরি খাওয়াটাই নিয়তের স্থলাভিষিক্ত। এজন্যে যে রোজার জন্যই সেহরি খাওয়া হয়। অবশ্যই যারা ঐ সময় খেতে সাধারণত অভ্যস্ত অথবা যেসব নাদান নিয়মিত সেহরি খায় কিন্তু রোজা রাখে না, তাদের জন্য নিয়ত করা জরুরী।
  • রমজানের প্রত্যেক রোজার জন্য আলাদা নিয়ত করা জরুরী। গোটা রমজানের জন্য একবার নিয়ত করা যথেষ্ট নয়।
  • রমজানের চলতি রোজার জন্য ফরজ বলে নিয়ত করা জরুরী নয়। শুধু রোজার নিয়ত করাই যথেষ্ট। কিন্তু কোন রোগী রমজানের রোজা রাখলে সে ফরজের নিয়ত করবে। কারণ তার উপর রমজানের রোজা ফরজ নয়। যদি শুধু রোজার নিয়ত করে অথবা নফল রোজার নিয়ত করে তাহলে তার রোজা রমজানের রোজা হবে না।
  • মুসাফিরের জন্য জরুরী যে রমজানে সে যেন অন্য কোন ওয়াজিব রোজার নিয়ত না করে।
  • রমজানের কাযা রোজার জন্য নির্দিষ্ট করে ফরজের নিয়ত করা জরুরী।
  • রোজায় দুপুরের পূর্বে নিয়ত করলে দুরস্ত (জায়েজ) হবে।
  • রাতে রোজা রাখার নিয়ত ছিল না। সকালেও রোজা রাখার খেয়াল ছিল না, তারপর দুপুরের আগে হঠাৎ মনে পড়লো যে, রমজানের রোজা ছাড়া ঠিক নয় এবং তড়িঘড়ি করে নিয়ত করে ফেলল, তাহলে রোজা দুরস্ত (জায়েজ) হবে। কিন্তু সকালে যদি কিছু খেয়ে থাকে তাহলে তো নিয়ত করার কোনো অবকাশই রইলো না।
  • রমযান মাসে কেউ ফরয রোযার পরিবর্তে নফল রোযার নিয়ত করলো এবং মনে করলো যে পরে ফরয রোযার কাযা করে নেবে। তথাপি সে রোযা রমযানের রোযাই হবে। নফল রোযা হবে না। এমনি নফল রোযার পরিবর্তে ওয়াজিব রোযার যদি নিয়ত করে,তথাপি রমযানের রোযা হবে। নীতিগত এক এই যে, রমযানে শুধু রমযানের ফরয রোযাই হবে,অন্য রোযা হবে না।
  • রোযা সুবেহ সাদেক থেকে শুরু হয়। অতএব সুবেহ সাদেকের পূর্বে এ সকল কাজ জায়েয যার থেকে বিরত থাকা রোযার মধ্যে ফরয। কেউ মনে করে যে, রোযার নিয়ত করার পর কিছু খাওয়া দাওয়া করা জায়েয নয়। একথা ঠিক নয়। সুবেহ সাদেকের পূর্বে খাওয়া দাওয়া প্রভৃতি জায়েয-যদিও সূর্যাস্তের পরই পরের দিনের রোযার নিয়ত করা হয়ে থাকে।
  • কেউ রাতে ইচ্ছা করলো যে, পরদিন রোযা রাখবে। কিন্তু সকাল হওয়ার পূর্বেই ইচ্ছা পরিবর্তন করলো এবং রোযা রাখলো না। এ অবস্থায় কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
  • রাতে নিয়ত করলে বলবে আমি আগামীকাল মাহে রমযানের রোযা রাখার নিয়ত করলাম। দিনে নিয়ত করলে বলবে মাহে রমযানের আজকের দিনের রোযার নিয়ত করছি। কিন্তু আরবীতে নিয়ত করা জরুরী (অত্যাবশ্যক) নয়, যে কোনো ভাষায় বলা যায়।
Advertisements

Leave a Reply