পোড়ামাটির শিল্প অনুচ্ছেদ | বাংলা ২য় পত্র
পোড়ামাটির শিল্প মৃণ্ময়শিল্প বা ভাস্কর্যের সর্বপ্রাচীন নমুনা, যাতে বাঙালি শিল্পিরা বিশেষ নৈপুণ্য অর্জন করেছিল। পোড়ামাটির শিল্পদ্রব্য শিল্পিদের সৃষ্টি-আকাঙ্ক্ষাকে যেমন পূরণ করত, তেমনি সাধারণ মানুষও তাদের গৃহস্থালি বা ধর্মীয় কর্মযজ্ঞে এর ব্যবহার করত। কাদা-মাটিকে সূর্যের তাপে অথবা আগুনে পুড়িয়ে নিয়ে শক্ত এবং টেকসই করা হতো। আর এভাবেই প্রাগৈতিহাসিককাল থেকে মানুষ পোড়ামাটির সামগ্রী তাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করে আসছে।
আমাদের দেশে পোড়ামাটির শিল্প অত্যন্ত জনপ্রিয়। পোড়ামাটি দিয়ে নানান প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি করা এ দেশের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। এককালে মাটির হাঁড়িতে ভাত তরকারি রান্নাবান্না হতো। এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ মাটির তৈরি জিনিস ব্যবহার করে। মাটির হাঁড়িতে দই খুব ভালো হয়। আখ বা খেজুরের গুড় মাটির পাত্রে রাখা হয়। এতে এগুলোর স্বাদ অক্ষুণ্ণ থাকে। খেজুরের রস মাটির পাত্রে রাখার প্রচলন আছে। মাটি দিয়ে এসব জিনিসপত্র যারা তৈরি করে তাদেরকে কুমোর বলে। হাঁড়ি, পাতিল, মাটির কলস, পুতুল, দইয়ের পাতিল, সানকি, বাসন ইত্যাদির এক সময় ব্যাপক প্রচলন ছিল। কুমোরেরা তখন এসব তৈরিতে সারা দিন ব্যস্ত থাকত।
একবিংশ শতাব্দীতে এসে এসব জিনিসের ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। এগুলোর বিকল্প চলে এসেছে। অবশ্য ঘর-বাড়ি সাজানোর উপকরণ হিসেবে নানা ধরনের শৌখিন সামগ্রী যেমন- ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট, কৌটা, বাক্স ইত্যাদি রুচিশীল জিনিসের ব্যবহার চোখে পড়ে। এককালের প্রাচীন স্থাপনা, দুর্গ, কেল্লা, মিনার, মসজিদ ও মন্দিরের গায়ে যেসব চোখ জুড়ানো ও দৃষ্টিনন্দন নকশা দেখা যায় তা আমাদের দেশি কারিগরদের তৈরি।
আরও পড়ুন……
Leave a Reply