শীতের সকাল রচনা

0
120
অফিস ছুটির জন্য আবেদন
অফিস ছুটির জন্য আবেদন
Advertisements
Rate this post

শীতের সকাল রচনা

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি তোমরা ভাল আছো । তো আজকে তোমাদের জন্য নিয়ে এলাম শীতের সকাল রচনা। এই রচনা তোমরা যারা পরীক্ষার্থী তাদের অনেক কাজে লাগবে । তো তোমাদের ভাল লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে Facebook messenger,  WhatsappTelegram, Instagram এবং IMO তে শেয়ার করতে পারো ।

শীতের সকাল রচনা
শীতের সকাল রচনা

শীতের সকাল রচনা

ভূমিকা:

বাংলাদেশের ঋতুচক্রে পৌষ ও মাঘ এ দুমাস শীতকাল। বঋতু পরিক্রমায় প্রত্যেক ঋতু তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবির্ভূত হয়। ষড়ঋতুর বাংলাদেশে শীত আসে হিমশীতল কুয়াশার চাদর জড়িয়ে। এ সময় পৃথিবী যেন নিষ্করুণ বৈরাগ্য ধারণ করে।

Advertisements

শীতের বিরল-বর্ণ সৌন্দর্য:

শীতের প্রকৃতি একেবারেই শুল্ক। এতে প্রাণোচ্ছল রূপমাধুরী নেই, এদিক দিয়েও সে রিক্ত। কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতি শিশিরসিক্ত রাস্তাঘাট, হিমেল বাতাসের মিষ্টি মধুর আমেজ সব মিলিয়ে শীতের সকালে এক ভিন্ন রূপ পরিলক্ষিত হয়। এ সময়ের নিস্তব্ধ প্রকৃতি যেন তার ধ্যানমগ্নতার প্রতিফলন।

শীতের সকালের বৈরাগ্য মূর্তি:

শীত প্রকৃতির এক বিষণ্ণ শুষ্ক রূপ। শীত যে ধূসরতার পরিমণ্ডল রচনা করে, তা যেমন করুণ, তেমনি বিষণ্ণ। বৃক্ষরাজির পাতায় পাতায় লাগে বার্ধক্যের সুকঠিন ছাপ। উত্তরের নির্দয় হিম বাতাস গাছের ডালে ডালে পাতা ঝরানোর খেলায় মেতে ওঠে।

শীতের সকাল:

শীতের সকালে মানুষ ও প্রকৃতির মাঝে এক অভূতপূর্ব সাড়া এবং পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। শীতের সকালে পত্র-পল্লবহীন গাছপালাকে অলংকারশূন্য বিধবা বলে মনে হয়। এ সময় উত্তর দিক থেকে হিমগর্ভ ঠান্ডা বাতাস একটি দীর্ঘশ্বাসের মতো হঠাৎ শিরশির করে বনের পাতার ফাঁক দিয়ে বয়ে যায়। পাতাগুলো সহসা কেঁপে ওঠে। টপাটপ করে শিশির ঝরতে থাকে। বনের পথ শিশিরসিক্ত হয়ে ওঠে।

টিনের চালে ও ঘাসে ঘাসে শিশির বিন্দু জমে থাকতে দেখা যায়। রাতের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যেন দিন আসতে চায় না। কখন ভোর হবে সেই প্রতীক্ষায় মানুষ, পশু-পাখি উন্মুখ হয়ে থাকে। তারপর ধীরে ধীরে পূর্বাকাশে জেগে ওঠে তেজহীন সূর্য। বেলা বেড়ে ওঠার সাথে সাথে শীতের সকালও তার কুয়াশার ঘোমটা ধীরে ধীরে খুলতে থাকে। সূর্যমামা কুয়াশা ভেদ করে অনেক উপরে উঠতে থাকে। সোনালি রোদ গায়ে লাগলে কোমল উষ্ণ আরাম অনুভূত হয়। গ্রামের কৃষকরা বলদ হাঁকিয়ে মাঠের দিকে অগ্রসর হয়।

গ্রাম ও শহরে শীতের সকাল:

গ্রামে ভিন্ন এক রূপ নিয়ে শীতের সকাল উপস্থিত হয়। শীত নিবারণের জন্য দরিদ্র মানুষরা আগুনের কুণ্ড জ্বালিয়ে তার চারপাশে বসে গা গরম করে। সেখানে বসে সবাই গল্পে মেতে ওঠে। এক সময় গাছপালার ফাঁক দিয়ে মিষ্টি রোদের ঝলকানি এসে পড়ে। শিশুরা চাদর মুড়ি দিয়ে সকালে মক্তবে যায়। গাঁয়ের বধুরা মনের আনন্দে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরিতে লেগে যায়।

শহরে শীতের সকালের ভিন্ন মূর্তি লক্ষ করা যায়। ভোরে কাকের ডাকে সকলের ঘুম ভাঙে। শহরেও শিশির পড়ে এবং উত্তরের শীতল হাওয়া বয়ে যায়। তবে তা ইট পাথরের চার দেয়ালে বন্দি মানুষদেরকে গ্রামের মানুষের মতো আন্দোলিত করে না। এক কথায়, গ্রাম-বাংলার উদাস করুণ শীতের সকালের স্নিগ্ধ মধুর রূপটিকে শহরের ইট-কাঠ-পাথরের কৃত্রিম পরিবেশের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না।

উপসংহার:

শীতের সকাল অধিকাংশের জন্যই কষ্টদায়ক। বিশেষত শ্রমজীবী মানুষের জন্য বেশি কষ্টকর। তবু শীত আমাদের জন্য অনেক ফসল, শাকসবজি আর আনন্দ বয়ে আনে। এ আনন্দ দেশের, প্রকৃতির; এ আনন্দ জীবনের। শীত আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে যেমন শুষ্কতা আর রুক্ষতায় জড়িয়ে রাখে, তেমনি পিঠাসহ বিচিত্র খাবারে আমাদের জীবনকে আমোদিত করে তোলে।

আরও পড়ুন……

Advertisements

Leave a Reply